মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়

 

মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়

আজ আমরা আলোচনা করব মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে। ঘুম, সময় মত খাওয়া, সবসময় মন সতেজ ও হাসিখুশি থাকা,  শরীরের যত্ন নেওয়া এবং হালকা ব্যায়াম করা মেয়েদের ওজন কমানোর উপায়গুলোর মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চেহারা অতিরিক্ত ভারী হওয়া মানেই মেয়েদের সমস্যার শেষ নেই। এমনকি রাস্তাঘাটে কিংবা বন্ধুদের কাছেও হাসির খোরাক হতে হয়। 


অতিরিক্ত ওজন মানে  শুধু দৈহিক শরীরের ভার বহনে বাড়তি ঝামেলা নয়। রয়েছে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও।  গবেষণায় দেখা গিয়েছে,  মোটা মেয়েদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা শারীরিকভাবে ফিট থাকা মেয়েদের তুলনায় ৬৬ ভাগ বেশি।  অতিরিক্ত ওজনের কারণে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা,  হরমোনজনিত সমস্যাসহ নানা ধরনের লক্ষণীয়।


 এই পোস্টে আমরা মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জানব। অতিরিক্ত ওজনের কারণে ভয় পাচ্ছেন?  দুশ্চিন্তা না করে কিভাবে অতিরিক্ত ওজন কমানো যায় সেই প্রস্তুতি গ্রহন করুন। 


১। খাওয়া-দাওয়া


                        ক) মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না


 মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে আমাদের শরীরে ইন্সুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে চর্বি সংরক্ষণ করার একটি প্রধান হরমোন হচ্ছে ইন্সুলিন। শরীরে ইন্সুলিন বেড়ে যাওয়া মানে হজম প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়া। 


                        খ) সবজি ও প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি খান


আপনার প্রতিদিনের খাবারের সাথে প্রোটিন, ফ্যাট এবং অল্প কার্বোহাইড্রেট যুক্ত সবজিগুলো রাখুন। এই খাবারগুলো আপনাকে সুস্থ সবল রাখার পাশাপাশি ওজন কমিয়ে আনতে অনেকটাই সাহায্য করবে। মাছ, মাংস, সামুদ্রিক খাবার, ডিম, দুধ সহ সব ধরনের প্রোটিনসহ খাবার নিয়মিত খাওয়া চেষ্টা করুন। 


অল্প কার্বোহাইড্রেট যুক্ত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, পালংশাক, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, লেটুস, শিম, গাজর, শসা ইত্যাদি সবজিগুলো আপনার খাবার তালিকায় বেশি বেশি রাখুন। 



                        গ) না খেয়ে থাকবেন না


 ডায়েট মানে অনেকেই চিন্তা করে থাকেন না খেয়ে থাকলে বোধ হয় ওজন কমে যাবে। এটা সম্পূর্ণ ভুল চিন্তা ভাবনা। না খেয়ে থাকলে আপনার ওজন কমবে না বরং আপনি অসুস্থ হয়ে যাবেন।  এজন্য দিনে ৩-৪ বার খাবার খেতে হবে। কিন্তু পেট ভরে খাওয়া যাবে না। পরিমাণ মত পানি খেতে হবে। 


মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় হিসেবে এই পোষ্টের  মধ্যে আপনার জন্য রয়েছে সারাদিনের খাবার তালিকা। নিচের দেওয়া খাবার গুলো আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে পারলে আপনি আপনার অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে আনতে পারবেন খুব সহজেই। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক  খাবার গুলো কি কি?



ভোর সকালের নাস্তা


  • সকালে একটু হাঁটাহাঁটি করার পর একগ্লাস লেবু ও মধু একত্রে মিশিয়ে পানিতে মিশিয়ে খাবেন।
  • কুসুম গরম এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ মধু ও লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  •   লেবুতে আপনার এসিডিটি থাকলে লেবুর রস কম করে নিবেন কিংবা খালি পেটে না খেয়ে হালকা কিছু খাওয়ার পর খাবেন।
  • প্রতিদিন সকালে এভাবে করে মধু ও লেবু পানিতে মিশিয়ে খেলে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমতে থাকবে।
ওজন কমানোর পাশাপাশি এই পানীয় আপনার ত্বক পরিষ্কার করে তুলবে এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে।  



সকালের খাবার


  • মাঝারি সাইজের গমের আটার রুটি রাখতে পারেন আপনার সকালের খাবারে।
  • রুটির সঙ্গে ১ কাপ সবজি/বুটের ডাল খেতে পারেন।
  • কুসুম ছাড়া একটি সিদ্ধ ডিম, আধা কাপ টক দই খেতে পারেন।
টক দই পেটের চর্বি কমানোর জন্য অন্যতম একটি খাবার। মেদ কমানোর পাশাপাশি টক দই শরীরের ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর যোগান দিয়ে থাকে।  দাঁত ও হাড় কে শক্তিশালী করে ভিটামিন ডি। 




মধ্য সকালের নাস্তা


  • মধ্য সকালের নাস্তায় ২৫ গ্রাম ভাজা কলাই খেতে পারেন।
  • শর্করা ও  ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে কলাইতে, তবে কলাইতে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ওজন কমাতে কলাই অন্যতম কার্যকরী একটি খাবার
  • মৌসুমি সবজির সালাদ খেতে পারেন।
  • কাঁচা শসা খেতে পারেন সালাদ হিসেবে।
সালাদে ক্যালরির পরিমাণ একদমই কম। এই খাবার আপনার পেট ভরাবে তবে কোনো ক্যালারি জমাবে না। ফলে আপনার অতিরিক্ত ওজন কমতে থাকবে এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকবে।



দুপুরের খাবার


  • দুপুরের ভাত খাবেন ১ কাপ।
  • ভাতের সাথে শাক (১ কাপ) খেতে পারেন। 
  • বড় সাইজের মাছের টুকরা (১২০ গ্রাম) নিবেন অথবা সবজিসহ রান্না করা মাংস (১২০ গ্রাম) খাবেন। 
এর পাশাপাশি আধা কাপ পরিমাণ সবজির সালাদ এবং লেবু।




রাতের খাবার


 রাতের খাবার হিসেবে মাঝারি সাইজের

  • গম/আটার রুটি খাবেন।
  • এর সাথে সবজি দিয়ে রান্না করা দুই থেকে তিন টুকরা মাংস খাবেন অথবা ছোট মাছের তরকারি। 




২। ব্যায়াম


জন কমানোর জন্য ব্যায়াম করতে পারেন।

  • ঘরে বসে কিংবা খোলা মাঠেও ব্যায়াম করতে পারেন।
  • মাঝে মাঝে বাইরে হাঁটতে যেতে পারেন
  • ঘরে স্কিপিং করতে পারেন।
নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে ওজন কমতে বাধ্য। 




৩। ঘুম


মানবদেহের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  ঘুম মানুষের শরীর, মন,  অনুভূতিকে প্রভাবিত করে। আমাদের সারাদিনে খাওয়া খাবারের  পুষ্টিগুনগুলো ঘুমের মধ্যে আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গ প্রত্যঙ্গে কর্মক্ষম সৃষ্টি করে। এজন্য 

  • কজন পূর্ণবয়স্ক নারীর দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন
কম ঘুমের কারণে শরীর খারাপ, মন খারাপ, মাথা ব্যাথা, কাজে অনিচ্ছা ও নানা দুশ্চিন্তাসহ এগুলো মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকে। 


আজকের পোষ্টে আমরা আলোচনা করেছি মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে।  অনেকেই মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় সম্পর্কে জানার জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন।  আপনি যদি আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান  তাহলে আজকের পোষ্টে দেওয়া দিকনির্দেশনা বা উপায়গুলো  মেনে চলতে পারলে আশা রাখতে পারেন আপনি আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবেন।  তাহলে আজ এই পর্যন্তই, পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post