জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম

 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম

আজ আমরা আলোচনা করব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম সম্পর্কে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং সিস্টেম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আজকের এই পোস্টে আমরা দেখানোর চেষ্টা করব কিভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং পয়েন্ট সিস্টেমে অনার্স, ডিগ্রী বা অন্যান্য পরীক্ষার সিজিপিএ CGPA গণনা করা হয়ে থাকে। সিজিপিএ কি? বাংলাদেশে  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের  অনার্স, ডিগ্রী ও মাস্টার্স পরিক্ষার গ্রেডিং সিস্টেমকে সিজিপিএ বলা হয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম। 


সিজিপিএ এর পূর্ণরূপ কি? 

সিজিপিএ (CGPA) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Cumulative Grade Point Average. এছাড়াও সিজিপিএ (CGPA) এর অর্থ হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল জিপিএ বা গ্রেড পয়েন্ট গড়কে যখন ভাগ করা হয় নির্ধারিত বছর দিয়ে, তখন তাকে সিজিপিএ (CGPA) বলা হয়। 



জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম



সিজিপিএ গ্রেডিং পদ্ধতি


একজন শিক্ষার্থীর চার বছরের প্রত্যেকটি বিষয়ে অর্জনকৃত পয়েন্টগুলো একত্রে যোগ করে সর্বমোট ক্রেডিট দিয়ে ভাগ করলে যে ফলাফল পাওয়া যায় তাকে বলা হয় সিজিপিএ গ্রেডিং বা সিজিপিএ। 



সিজিপিএ বের করার নিয়ম


কিভাবে আপনি আপনার জিপিএ এবং সিজিপিএ এর ফলাফল বের করবেন সে সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা একটি বাস্তব জীবনের উদাহরন প্রদান করে NU GPA ও  NU CGPA বের করার নিয়ম শেয়ার করবো। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম জানতে পোস্টটি পড়তে থাকুন।




জিপিএ (GPA) এর পূর্ণরূপ কি?


আমরা প্রায় সবাই জিপিএ শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। তবে খুব কম লোকই আছেন যারা জিপিএ এর পূর্ণরূপ কি জানেন না। জিপিএ কোন শিক্ষার্থীর একাডেমিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে থাকে। জিপিএ (GPA) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Grade Point Average. একটি ক্লাস, প্রোগ্রামে কোর্স বা কোন বিষয়ের সামগ্রিক ফলাফল তুলে ধরে  জিপিএ (GPA)। 



জিপিএ গ্রেডিং পদ্ধতি কি ও সুবিধাগুলো


জিপিএ (GPA) গ্রেডিং পদ্ধতিটি  ব্যবহার করা হয় স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুল গুলোতে।  সাধারণত স্কুলগুলো জিপিএ পদ্ধতি অনুসরণ করে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সিজিপিএ পদ্ধতি অনুসরণ করে। এছাড়াও প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গ্রেডিং পদ্ধতির মধ্যেও বেশ অনেকটাই পার্থক্য রয়েছে।  অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়  পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একই ধরণের গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ করে না।  কোন দেশে যদি জিপিএ-৫ মানে সর্বোচ্চ নম্বর বুঝায় তাহলে ওই দেশে জিপিএ-৫  পাওয়া শিক্ষার্থীদের চাকরির ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। 


ভালো থাকার ফলে একজন শিক্ষার্থী দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এছাড়াও সারা বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত  শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা।





সিজিপিএ এবং জিপিএ এর মধ্যে পার্থক্য কি?


সিজিপিএ এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Cumulative Grade Point Average এবং  জিপিএ এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Grade Point Average সিজিপিএ হচ্ছে একজন শিক্ষার্থীর 4 বছরের সকল বিষয়ের অর্জিত মোট পয়েন্ট সমূহ যোগ করে সর্বমোট ক্রেডিট দিয়ে ভাগ করা ফলাফল। অন্যদিকে জিপিএ হচ্ছে একজন শিক্ষার্থীর প্রত্যেক বছরের ফলাফল।  তাই বলা যেতে পারে জিপিএ হচ্ছে প্রত্যেক বছরের ফলাফল এবং সিজিপিএ হচ্ছে সকল  জিপিএ নিয়ে তৈরি করা ফলাফল।  অনেক দেশেই এখন আর জিপিএ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না কিন্তু সিজিপিএ এখন প্রায় সব দেশেই ব্যবহার করা হচ্ছে। 




জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাস গ্রেড


সব রকমের প্রয়োজনীয় এবং নির্দিষ্ট কোর্স যেমন লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক ইত্যাদি  এবং পরীক্ষাতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ  বাধ্যতামূলক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাস গ্রেড হচ্ছে  শিক্ষার্থীদেরকে কমপক্ষে ৪০%  নম্বর পেতে হবে অথবা ডি গ্রেড অর্জন করে সমস্ত বিষয়ে পাস করতে হবে। এভাবে পাস করলে ২ পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে শুধু ডি গ্রেড বা তার থেকে বেশি গ্রেড পয়েন্ট পেলেই তা গ্রহনযোগ্য হবে।  জিপিএ এর সাথে সম্পর্কিত ইংরেজি বিষয়ের নন ক্রেডিট ফলাফল এই হিসেবে গ্রহণযোগ্য পাবেনা। 




জিপিএ গ্রেড তালিকা



কত পয়েন্টে কোন গ্রেড


বাংলাদেশের স্কুল কলেজগুলোতে যে নিয়মে জিপিএ গ্রেড পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে তা তুলনামূলক ভাবে বোঝা খুবই সহজ।  যদি কোন শিক্ষার্থী ৮০-১০০ নম্বর পায়, তাহলে সে এ প্লাস (A+) পাবে। তারপর এর নিচের গ্রেড এ (A) পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ৭০-৭৯ নম্বর পেতে হবে।  এরপরে এ মাইনাস (A-)  গ্রেড  পাবে ওই শিক্ষার্থী যে ৬০-৬৯ নম্বর পেয়েছে। ৫০-৫৯ নম্বর কোন শিক্ষার্থী পেলে সেটা ধরা হবে বি (B) গ্রেড। আপনাদের বোঝার সুবিধার  জন্য নিচে জিপিএ গ্রেড পদ্ধতি তালিকা দেওয়া হল। এতে করে আপনারা সহজেই যে কেউ  জানতে পারবেন কত পয়েন্টে কোন গ্রেড হবে। 



নম্বর

গ্রেড

পয়েন্ট

৮০-১০০ নম্বর

A+ (এ প্লাস)

৫.০

৭০-৭৯ নম্বর

A (এ)

৪.০

৬০-৬৯ নম্বর

A- (এ মাইনাস)

৩.৫

৫০-৫৯ নম্বর

B (বি)

৩.০

৪০-৪৯ নম্বর

C (সি)

২.০

৩৩-৩৯ নম্বর

D (ডি)

১.০

০-৩৩ নম্বর

F (ফেল বা অকৃতকার্য)

০.০





সিজিপিএ গ্রেড তালিকা




জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং সিস্টেম ও তালিকা 


নিচে আপনাদের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং সিস্টেম তালিকা দেওয়া হল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম সম্পর্কে যারা জানতে চান, তারা নিচের এই অংশটি দেখলে খুবই সহজেই জানতে পারবেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেডিং সিস্টেম বা সিজিপিএ বের করার নিয়ম অনেকটাই জিপিএ গ্রেড বের করার মতোই। তবে নতুনদের কাছে সিজিপিএ বের করার নিয়মটি একটু জটিল মনে হতে পারে।  আশা করছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেড তালিকা দেখার পর আপনিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করতে পারবেন। 


নম্বর

গ্রেড 

পয়েন্ট/বিভাগ

৮০ বা তদুর্ধ 

A+

৪.০০/১ম বিভাগ

৭৫-৮০ নম্বর

A

৩.৭৫/১ম বিভাগ

৭০-৭৫ নম্বর

A-

৩.৫০/১ম বিভাগ

৬৫-৭০ নম্বর

B+

৩.২৫/১ম বিভাগ

৬০-৬৫ নম্বর

B

৩.০০/১ম বিভাগ

৫৫-৬০ নম্বর

B-

২.৭৫/২য় বিভাগ

৫০-৫৫ নম্বর

C+

২.৫০/২য় বিভাগ

৪৫-৫০ নম্বর

C

২.২৫/ ২য় বিভাগ

৪০-৪৫ নম্বর

D

২.০০/২য় বিভাগ

০-৪০

F (ফেল)

০.০০/৩য় বিভাগ




আজ আমরা আলোচনা করেছি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম সহ সিজিপিএ এর পূর্ণরূপ, সিজিপিএ গ্রেডিং পদ্ধতি,  সিজিপিএ বের করার নিয়ম,  জিপিএ (GPA) এর পূর্ণরূপ কি, জিপিএ গ্রেডিং পদ্ধতি কি ও সুবিধাগুলো, সিজিপিএ এবং জিপিএ এর মধ্যে পার্থক্য কি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাস গ্রেড সহ জিপিএ গ্রেড তালিকা এবং সিজিপিএ গ্রেড তালিকা দেখানো হয়েছে। আশা করছি এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদেরকে খুবই সহজ ভাবে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পেরেছি।  ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই  কমেন্টে জানাবেন, আমরা সংশোধন করে দিব। পোষ্টটি আপনার উপকারে এসে থাকলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করুন এবং এই ধরনের আরও পোস্ট পড়তে বেশি বেশি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ। 


Post a Comment

Previous Post Next Post