মিথ্যুক ও মিথ্যে কথা বোঝার উপায় কী?






মিথ্যুক চেনার দশ উপায়


আমিনুল ই শান্ত : বৈচিত্র্যময় এ সমাজে রয়েছে বহু চরিত্রের মানুষ। দৈনন্দিন জীবনে এসব মানুষ নানা কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। যারপরনাই অনেক মানুষই কোনো না কোনো মিথ্যা বলে যাচ্ছে। মিথ্যা বলার এ প্রবনতা এক প্রকারের ব্যাধিও বটে।


এক

যারা মিথ্যা কথা বলে তারা আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না। অথবা অতিমাত্রায় আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে। যখন কেউ মিথ্যা কথা বলে, তখন তিনি ভাবেন তাকে পরখ করছে। তাই নিজেকে বাঁচাতে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকেন কিংবা এদিক ওদিক চোখ ফেরান। আবার কোনো কোনো মিথ্যুক মিথ্যা বলার সময় অনবরত চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। কারণ তারা মনে করেন চোখে চোখ রেখে কথা বললে আপনি তার কথা বিশ্বাস করবেন।

দুই 


মিথ্যাবাদীরা খুব একটা সংকোচবোধ করেন না। যেমন- ‘কোনো নারীর সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক নেই।’ কোনো মিথ্যাবাদী এমন মন্তব্য করে নিজের কথা স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এ মন্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা এর ফলে অনেকাংশে কমে যায়। অনেকেই আবার প্রশ্ন করে বসেন ‘আপনি কোথা থেকে জানতে পারলেন।’ আপনি যতক্ষণে এ প্রশ্নের জবাব দেন ততক্ষণে মিথ্যবাদী নতুন গল্প সাজিয়ে নেন।

তিন

 মিথ্যুকদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজও তাদের ধরিয়ে দিতে পারে। মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকে উসখুস করেন। যার সঙ্গে কথা বলছেন, তার দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার বারবার চোখের পাতা ফেলেন। গলার স্বরও ক্রমাগত পরিবর্তন হতে থাকে তার। অনেক সময় হাত মুড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। এমন হলে বুঝবেন, ওই ব্যক্তি যে বিষয়ে বেশি কথা বলতে চাইছে না বা বেশি তথ্য জানাবেন না।বারবার মুখে হাত দেন বা হাতের কাছে যা আছে তা নিয়েই নাড়াচড়া শুরু করেন।

চার

কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করা না হলেও মিথ্যাবাদীরা অনেক সময় প্রয়োজনের তুলনায় বেশি তথ্য দিয়ে ফেলেন। কারণ তারা মনে করেন, বেশি তথ্য তাদের দাবিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে। কার্যত এর ফলে তাদের গল্প বেশি জটিল ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। গল্প যত বড় হয় বিশ্বাসযোগ্যতাও তত দূরে সরে যায়।

পাঁচ


যে মিথ্যা কথা বলছে, সে আত্মপক্ষ সমর্থনে বেশি জোর দিয়ে থাকে। নিজের উপর থেকে মনোযোগ সরাতে সমস্ত পন্থা অবলম্বন করবে। আপনি তার ইমোশনে আঙ্গুল তুলেছেন বলে, খুব শিগগিরি রেগে যাবে। যে ব্যক্তি সত্য কথা বলে সে অফেন্সিভ হয়ে পড়ে।

ছয়


যারা মিথ্যা বলেন তারা তুচ্ছ বিষয়কেও সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেন, কিন্তু বহু গুরুত্বপূণ তথ্য লুকিয়ে ফেলেন। তথ্য অতিরঞ্জিত করাকে মিথ্যাবাদীরা নিরাপদ মনে করেন। কিন্তু শ্রোতা বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শ্রোতা সমস্ত তথ্য মনে রাখেন এবং পরে প্রশ্ন করেন। সত্য হলে আগের ও পরের মন্তব্যে কোনো তফাত থাকে না।

সাত

চোখের মুভমেন্ট ডিরেকশন লক্ষ্য রাখুন। ডান হাতি কোনো ব্যক্তি কোনো কিছু মনে করার চেষ্টা করলে তিনিও চোখ বাম দিকে ঘুরিয়ে রাখবেন। বাঁহাতি লোকেরা এর বিপরীত দিকে করেন। মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকেই বার বার চোখের পাতা ফেলেন বা চোখ কচলান। বার বার চোখে হাত দিলেও আঁচ করা যায় ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলছেন।

আট 


মিথ্যা কথা বলার সময় অনেকেই অতিরিক্ত ঘামেন। আবার অনেক ব্যক্তিই আছে যারা নার্ভাস বা লজ্জাবোধ করলে ঘামতে শুরু করেন। এ ধরণের ব্যক্তিকে আবার মিথ্যাবাদী বলবেন না। কিন্তু কেউ যদি কথা বলার সময় ঘামতে থাকেন এবং সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠেন ও কষ্ট করে ঢোক গিলতে থাকেন তাহলে বুঝবেন অবশ্যই তিনি মিথ্যা বলছেন।

নয়


মিথ্যাবাদীর মাইক্রো এক্সপ্রেশন লক্ষ্য রাখুন। কথার শুরুতে হাসি মুখ থাকলেও সে হাসি বেশিক্ষণ স্হায়ী হবে না। অবচেতন মনে অনেকেই এই মাইক্রো এক্সপ্রেশন লক্ষ্য করে থাকেন। তারা বুঝতে পারে মিথ্যা বলছে। কারণ যারা মিথ্যে বলছে তাদের মাইক্রো এক্সপ্রেশন মন দিয়ে লক্ষ্য করেছেন তারা।

দশ

মিথ্যাবাদীকে একই গল্প দ্বিতীয়বার বলতে বলুন। দেখবেন ওই ব্যক্তি যদি মিথ্যা বলার জন্য গল্প বানিয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমবার যা বলেছেন তার সঙ্গে পরের বারের গল্পের কোনো মিল থাকবে না।

Post a Comment

أحدث أقدم