বাসে উঠলেই বমি বমি ভাব হয়! মুক্তি পাবার উপায় কি?

 

মোশন সিকনেস (motion sickness) হ'ল গাড়িতে উঠলে বমি বমি ভাব বা বমিভাব বা মাথা ঘোরা হওয়া অনুভূতি। গতির অসুস্থতার কারণে ভ্রমণের আনন্দ ধূলিতে কমে যায় যা পড়তে বিব্রতকর। বাসে বমি হওয়ার কারণ : আপনি কোনও বাস, প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাসে উঠলে এই ধরণের গতি অসুস্থতা সাধারণত হয়। গতি এবং জড়তা সমন্বয় ছাড়াই মস্তিষ্কের জাহাজগুলিতে বমি বমি করতে পারে। অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য Balance রক্ষা করে। যখন গাড়িতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল Dynamic। কিন্তু চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো থাকে স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার ফলে তৈরি হয় মোশন সিকনেস। এছাড়া অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে বমি হতে পারে, অসুস্থতার জন্য বমি হতে পারে, বাজে কোন গন্ধের কারণেও বমি হতে পারে। যাত্রা পথে বমি থেকে মুক্তির উপায় : ১. মোশন সিকনেস কাটিয়ে উঠতে পারে যদি আপনি নিজের গাড়িতে যাতায়াত করেন এবং অবিরাম বিরতিতে ভ্রমণ না করে সংক্ষিপ্ত বিরতিতে যাত্রাটি করেন। বিরতির সময় কিছুক্ষণ খোলা বাতাস উপভোগ করে আপনি আবার যাত্রা শুরু করতে পারেন। ২. চুইংগাম এবং আদা গতির অসুস্থতা হ্রাস করতে সহায়তা করে। ভ্রমণের সময় চিউইং গাম বা আদা চিবানো এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে। ৩. যাত্রার সময় ঘুমানোর অভ্যাস করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যায়। গাড়ির মধ্যে না তাকিয়ে দিগন্তের দিকে তাকালে ভালো। যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না, এতে বমি ভাব বেশি হয়। ৪. কম কাঁপানো সিটে বসে থাকা ভাল। বাসে ভ্রমণের সময়, জানালার সামনের সিটে বসে, আপনি আরও হালকা এবং বাতাস পেতে পারেন। ফলস্বরূপ শরীরে আরও আরাম পাওয়া যায়। ৫. ভ্রমণের পূর্বে তেল ও মশলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যাত্রার সময় মশলা বা তৈলাক্ত খাবার খেলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ৬. তেলের গন্ধThe smell of oil যাদের সহ্য হয় না, তারা পছন্দের এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অন্যান্য যাত্রীর অবস্থাও বিবেচনায় রাখতে হবে। ৭. যাত্রাকালে পাশের যাত্রীর সাথে কথা না বলা এবং মোবাইল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এড়িয়ে চলা উচিত। উল্টোমুখী সিটে না বসা এবং যাত্রাকালে বই না পড়াই ভালো। ৮. টক জাতীয় ফল খেলেও বমি ভাব দূর হয়। এছাড়া লেবু পাতার গন্ধ, কমলা লেবুর গন্ধেও বমি ভাব দূর হয়। গরম লেবুর পানিতে একটু লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন, মাথাব্যথা, বমি এবং বমিবমি ভাব দূর করতে এই পানি উপকারী। কিন্তু গ্যস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বমি হলে লেবু না খাওয়াই ভালো। ৯. আদা বমি রোধের জন্য অনেক উপকারী, আদা হজমে সাহায্য করে। আদা কুঁচি চিবুতে পারেন বমি ভাব দূর হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আদা চা খেতে পারেন। এছাড়া যখনই বমি ভাব হবে মুখে এক টুকরা লবঙ্গ দিন এতে বমি ভাব চলে যাবে সাথে মুখের দুর্গন্ধ ও চলে যাবে। ১০. ভ্রমণের আগে হালকা কিছু খেয়ে বাসে উঠুন। কখনই খালি পেটে ভ্রমণ করবেন না । ভ্রমণের আগে ভারী কিছু খাবেন না। যাত্রাপথে বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, এসিডিটি হয় এমন খাবার না খাওয়াই ভলো। খুব বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বমি নিরোধক ওষুধ খেতে পারেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post