ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ: Muscle Work Out
যারা নিয়মিত জিমনেশিয়ামে বডিবিল্ডং এক্সারসাইজ করেন, তাদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের বৃদ্ধি পায়৷ এক্ষত্রে সবচেয়ে কার্যকর এক্সারসাইজ হল ভার উত্তোলন (Weight Lifting), যেমন ডাম্বেলিং, পুশ আপ, রিচ আপ, চিন আপ, পুল আপ ইত্যাদি৷
উল্লেখ্য, টেস্টোস্টেরন মানুষের মাংসপেশি বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করার জন্য আবশ্যক৷ এক্সারসাইজ অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে এবং পরিমিত পরিমাণে হতে হবে৷ অত্যাধিক মাত্রায় এক্সারসাইজ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে৷ কাজেই, যদি পারদর্শি না হন, তবে ফিজিক্যাল ট্রেইনার এর পরামর্শ নিন৷
•
খাবার (ডায়েট): টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধির জন্য খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ নিম্নলিখিত খাবারগুলো টেস্টোস্টেরন বৃৃৃৃদ্ধিতে সহায়ক৷
মধু
মধুতে আছে প্রাকৃতিক নিরাময়কারী উপাদান বোরোন। এই খনিজ উপাদান টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বাড়াতে এবং নাইট্রিক অক্সাইডের মাত্রা ঠিক রাখে। যা ধমনী সম্প্রসারণ করে লিঙ্গোত্থানে শক্তি সঞ্চার করে।
বাঁধাকপি
এই সবজিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। আরও আছে ইনডোল থ্রি-কার্বিনল। এই উপাদান স্ত্রী হরমোন ওয়েস্ট্রজেনের পরিমাণ কমিয়ে টেস্টোস্টেরন বেশি কার্যকর করে তোলে।
রসুন
রসুনের আলিসিন যৌগ মানসিক চাপের হরমোন করটিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে টেস্টোস্টেরন ভালোমতো কাজ করে। ভালো ফল পেতে রসুন কাঁচা খাওয়ার অভ্যেস করুন।
ডিম
ডিমে আছে স্যাচারেইটেড ফ্যাট, ওমেগা থ্রিএস, ভিটামিন ডি, কলেস্টেরল এবং প্রোটিন। টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরির জন্য এই উপাদানগুলো জরুরি।
কলা
এই ফলের ব্রোমেলেইন এনজাইম টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। আর দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহের উৎস হিসেবে কাজ করে।
কাঠবাদাম
নারী এবং পুরুষ উভয়ের ‘সেক্স ড্রাইভ’য়ের জন্য প্রতিদিন এক মুঠ কাঠবাদাম যথেষ্ট। এই বাদামে রয়েছে জিঙ্ক যা টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ায় আর কামবাসনা বৃদ্ধি করে।
কালিজিরা: এটি অত্যন্ত উপকারী এবং ওষুধী গুণসম্পন্ন একটি খাদ্য৷ শরীরের রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷
দিনে এক চা চামচ পরিমাণ কালিজিরা খালিপেটে দাঁত দিয়ে পিষ্ট করে নিয়মিত খেলে টেস্টোস্টেরন লেভেল বৃদ্ধি পায় এবং যৌনক্ষমতা উন্নত হয়৷
মাংস
বিশ্বাস করা হয় যারা একেবারেই মাংস খান না তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কম থাকে। রেড মিট (Red meat) যেমন, গরুর মাংস, খাসির মাংস, মাছ এগুলো টেস্টোস্টেরন তৈরীতে সহায়তা করে৷ তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার আগে সাবধান।
পালংশাক
এটা প্রমাণিত যে, ওয়েস্ট্রজেনের মাত্রা কমাতে পারে এই শাক। তাছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ই। আর এসবই টেস্টোস্টেরন তৈরির উপাদান।
আঙুর
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একথোক লাল আঙুর খাওয়া গেলে টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, শুক্রাণুর তৎপতরতা উন্নত করে আর শক্তিশালী করে।
ডালিম
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইম্পোটেন্স রিসার্চ থেকে জানা যায় যৌন কর্মে অক্ষম পুরুষদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ যারা প্রতিদিন ডালিমের রস খেয়ে থাকেন তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
•
আরো পড়ুন : টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির উপায়
লাইফস্টাইল (Lifestyle):
- পরিমিত ঘুম: ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার প্রথম একঘন্টা শরীরে টেস্টোস্টেরন তুলণামূলক বেশি নিঃসরণ হয়৷ দিনে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোনো এবং জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস এবং ৬-৮ ঘন্টা ঘুম টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে সহায়ক৷
- দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ পরিহার করা: দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপে থাকলে টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ কমে যায় এবং কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ হয়, যা টেস্টোস্টেরন হরমোনের বিপরীত কাজ করে৷ আমরা দৈনন্দিন জীবনে দেখে থাকি, দুশ্চিন্তা এবং শারীরিক কিংবা মানসিক চাপে থাকার জন্য অনেকের শরীর খারাপ হয়ে যায়, ওজন কমে যায়, চিকন হয়ে যায়৷ টেস্টোস্টেরন এর স্বল্পতা ও কর্টিসলের আধিক্য এর জন্য দায়ী হতে পারে৷
- বদ অভ্যাস যেমন সিগারেট, মদ, অথবা অন্য যেকোনো ধরণের নেশা পরিহার করা: সিগারেট, মদ, নেশা এগুলো স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়৷ দেখুন: গাঁজা সেবনের পর করার পর শরীর নিস্তেজ হয়ে যায় কেন? এ নাঈমুল মুশফিক (Naimulmusfiq Naim) এর উত্তর৷৷৷ ফলে শরীরে (পরোক্ষভাবে) টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যায়৷
- যৌনমিলন: নিয়মিত যৌন মিলন টেস্টোস্টেরন স্বাভাবিক রাখে৷ কিন্তু, অত্যাধিক সহবাস টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়৷ গবেষণায় দেখা গেছে যৌন মিলনের পর প্রায় ১২ ঘন্টা পর্যন্ত টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এর পর কমতে শুরু করে৷ ২৪ ঘন্টার ভিতর স্বাভাবিক এর চেয়েও কমে যায়৷ অতঃপর তা আবার স্বাভাবিক মাত্রায় আসতে ৪৮-৭২ ঘন্টা সময় লাগে৷
- হস্তমৈথুন ও অত্যাধিক যৌনমিলন পরিহার: হস্তমৈথুন এবং অত্যাধিক যৌন মিলনের ফলে শরীরে টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যায়৷ যার ফলে শরীরে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে৷
- পর্ণোগ্রাফি, যৌন-উত্তেজনাকর দৃশ্য দেখা হতে বিরত থাকা: এগুলোর ফলেও সাময়িকভাবে টেস্টোস্টেরন লেভেল বৃদ্ধি পেলেও যৌনাঙ্গ দুর্বল হয়ে যায় এবং পরবর্তিতে স্থায়ীভাবে টেস্টোস্টেরন এর মাত্রা কমে যায়৷
টেস্টোস্টেরন থেরাপী (Testosterone therapy): যদি কারো শরীরে এই হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকএর তুলনায় কম থাকে, তবে ওষুধের মাধ্যমে শরীরে হরমোন সরবারহ করে টেস্টোস্টেরন এর পরিমাণ বাড়ানো যায়৷ তবে এর বেশকিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে৷৷
Post a Comment