অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের কারনে চেহারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে একা বন্দ করার চিকিৎসা কি?

অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের কারনে চেহারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে একা বন্দ করার চিকিৎসা কি?

স্বপ্নদোষ বা Nightmares হচ্ছে ছেলেদের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতের অভিজ্ঞতা। স্বপ্নদোষকে "ভেজাস্বপ্ন" ও বলা হয়ে থাকে। সাধারণত ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে বা পুরুষদের ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে স্বপ্নদোষ বা nightmares খুবই সাধারণ ব্যাপার।

কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল পরেও যেকোনোই সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। স্বপ্নদোষে সাথে যৌন উত্তেজক স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে, আবার তা নাও থাকতে পারে। আবার পুরুষ বা ছেলেদের উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণায় দেখা যায়, প্রায়ই ৮৩ ভাগ পুরুষ জীবনে কোনো না কোনো সময় স্বপ্নদোষ নামক অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন। স্বপ্নদোষ নারীদের হতে পারে। কিন্তু তার মাত্রা পুরুষদের তুলনায় অনেকাংশেই কম।

ঘুম থেকে জাগার আগের সময় বা সাধারণ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্নদোষ হয়, তাকে ‘সেক্স ড্রিম’ বলা হয়। মহিলাদেরও ঘুমের মধ্যে চরম পুলক লাভের অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে।

কিছু ছেলে বা পুরুষ শুধু একটা নির্দিষ্ট বয়সে এ রকম স্বপ্ন দেখেন, পক্ষান্তরে অন্য বয়ঃসন্ধিকালের পর থেকেই সারাজীবন এ রকমের স্বপ্ন দেখতেই থাকেন। ঘন ঘন স্বপ্নদোষের সাথে ঘনঘন হস্তমৈথুন করার কোনো সুনিশ্চিত সম্পর্ক নেই।

বিশ্বখ্যাত যৌন গবেষক Alfred kinsey বলেছেন, ‘ঘনঘন হস্তমৈথুন এবং ঘনঘন যৌন উত্তেজক স্বপ্নের মধ্যে কিছুটা সম্পর্ক থাকে। যে পুরুষদের ঘনঘন স্বপ্নদোষ হয়, তারা কম হস্তমৈথুন করেন। এই পুরুষেরা গর্বিত হন এই ভেবে যে, তাদের ঘনঘন স্বপ্নদোষ বা nightmares হয়, এইসব কারণে তারা হস্তমৈথুন করেন না। অর্থ্যাৎ এদের বেলায় উল্টোটা সত্যি।

স্বপ্নদোষের কারণ:

স্বপ্নদোষের কারণ

১। বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের আধিক্যের জন্য।
২। খারাপ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা।
৩। নীল ছবিগুলো মধ্যে আসক্ত হওয়া।
৪। খারাপ কুতিবা বই পড়া।
৫। ঘুমাতে যাওয়ার আগে খারাপ বিষয় চিন্তা করা বা দেখা।

স্বপ্নদোষের প্রতিকার:

১. ব্যায়াম এবং যোগাসন একজন পুরুষকে তার শরীর, মন ও মস্তিষ্কের ওপর সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। প্রতিদিন যোগাসন ও ব্যায়াম করার ফলে যেসব যৌনকর্ম যা করলে আপনার স্বপ্নদোষ হতে পারে, আপনি তা নিজে এি কাজের মাধ্যমে আটকাতে পারবেন।

২. আপনার খাদ্যাভ্যাস বা খাদ্য তালিকার রুটিন বদল আনলেও স্বপ্নদোষ রুখে দেওয়া যায়। যেসব পুরুষদের স্বপ্নদোষ হয়, তারা আম্লিক খাবার খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিন।

৩. ধ্যান করলে মনোযোগ বাড়ে ও অভ্যন্তরীণ অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রণে মধ্যে রাখা যায়। ফলে পুরুষরা অযাচিত বা হস্তমৈথুন কিছু কাজ করার থেকে নিজেদের আটকাতে পারবেন এবং এটি স্বপ্নদোষ বন্ধ করার জন্য খুবই উপকারী।

৪. রাত্রে ঘুমানোর আগে গন্ধসার তেল দিয়ে গোসল করলে আপনার শরীর অনেক বেশি আরাম পাবে এবং আপনি শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন।

৫. উপরের কাজগুলো নিয়ম মেনে করেও যদি রাত্রে ধাতুনির্গমন বন্ধ না হয়, তাহলে আপনাকে সেক্সোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক চিকিৎসার দ্বারা স্বপ্নদোষের মূল কারণ বের করতে হবে এবং সেটার নিরাময় করেন, তাহলে আপনার হারানো শারীরিক শক্তি ও যৌনক্ষমতা পুনরায় ফেরত পাবেন।

স্বপ্নদোষের প্রতিকার করা একেবারেই সহজ। স্বপ্নদোষ(nightmares) চিহ্নিতকরণ করা অত্যন্ত জরুরী, যাতে পুরুষের যৌন-জীবন ব্যাহত না হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মধ্যে রাখতে নিচে লেখা ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা যেতেই পারে:

১. লাউয়ের মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুণ রয়েছে, যা শরীর গরম হতে দেয় না তাই স্বপ্নদোষ রুখতে পারে। লাউকে দু’ভাবে ব্যবহার করতে পারেন–

1. রাত্রে শুয়ার আগে লাউয়ের জুস খেতে পারেন।

2. তিলে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে এটিকে মালিশ করে নিন।

২. আমলার রস শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এক গ্লাস আমলার রস খেলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

৩. পেঁয়াজ এবং রসুনের শারীরিক নানান অসুস্থতা সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। ৩- ৪ কোয়া কাঁচা রসুন আর পেঁয়াজ যদি স্যালাত হিসেবে খাওয়া যায় তবে স্বপ্নদোষ অনেকটা কমে যেতে পারে।

৪. আগেই ভিজিয়ে রাখা অ্যালমন্ড, কলা ও আদা যদি দুধে সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে রাতে ধাতুনির্গমনের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। কলা ও দইয়ের মধ্যে শরীর ঠাণ্ডা করার গুণ রয়েছে যা এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

৫. সেলেরি ও মেথির রস অকাল বীর্যপাত ও স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে খুবই বেশি কার্যকরী। সেলেরি ও মেথির রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এইসব নিয়ম মেনে চললে কথা দিচ্ছি, আপনি স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। স্বপ্নদোষ স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। স্বপ্নদোষ কোনো শারীরিক সমস্যা নয়, এটি প্রযোজনা জিবি হিসেবে মানব প্রজাতি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অন্যতম অংশ।

আপনি যদি হস্তমৈথুন করেন বা সহবাস করেন বা নাই করেন আপনার দেহ প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি করবে আর এটা বের হবেই। মেডিকেল ভাষায়, স্বপ্নদোষ কোনো রোগ বা সমস্যা নয়। হস্তমৈথুন করার সাথে স্বপ্নদোষের কোন সম্পর্ক নাই। গোপনাঙ্গ স্পর্শ না করলেও হতে পারে স্বপ্নদোষ।

Post a Comment

أحدث أقدم