টমেটোর কিছু উপকারিতা ও অপকারিতা কী কী?

 

টমেটোর উপকারিতাঃ

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে , টমেটোতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে , যা ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।

হৃত্পিণ্ডকে শক্তিশালী করা : টমেটোতে রয়েছে প্রচুর আঁশ , পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি । হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে টমেটো খাওয়ার বিকল্প নেই ।

দেহের হাড় মজবুত করে : টমেটোতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনকে,যা দেহের হাড় মজবুত করে এবং ভাঙ্গা হাড়কে জোড়া লাগায় দ্রুততার সঙ্গে ।

রাতকানা রােগ নিরাময় করে : টমেটো একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।এতে যে ভিটামিন এ রয়েছে , সেটা রাতকানা রােগ নিরাময় করে ।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন,ত্বকের ক্যানসারের পাশাপাশি,বিভিন্ন প্রকার হৃদরােগ প্রতিরােধ করতে , রক্ত পরিশুদ্ধ করতে , টক্সিন রিমুভ করতে , দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে , কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করার মতাে উপকারও করে টমেটো।

ওজন কমায় টমেটো : যাদের স্থূলতা নিয়ে চিন্তা , তারা এই প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন । প্রতিদিনের প্রচুর পরিমাণে টমেটো আমাদের দেহের অতিরিক্ত চর্বি দূর করে এবং দেহে অতিরিক্ত মেদ জমতে দেয় না ।

চুল পড়া কমায় : টমেটোতে যেই পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে,সেটা আমাদের চুল পড়া কমায় এবং চুলকে মজবুত করে।

বাতের ব্যথা দূর করে : যাদের বাতের ব্যথা প্রচণ্ড , তারা টমেটো খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করবেন , কারণ এটি বাতের ব্যথা অনেকাংশে দূর করতে সক্ষম । ফুসফুস এবং যকৃতের

ক্যানসার প্রতিরােধক : টমেটোতে উচ্চমাত্রার আঁশ এবং প্রােটিন থাকে , যা ফুসফুস এবং যকৃতের ক্যানসার এর ঝুকি কমায় ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে টমেটো : গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে , প্রতিদিন ২৫ গ্রাম টমেটো খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করাটা অনেক বেশি সহজ হয়ে যায় । পুরুষদের জন্য ২৫ গ্রাম এবং নারীদের জন্য ৩৫ গ্রাম টমেটো ফলপ্রসূ । চমৎকার ভাবে দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এই টমেটো।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর টমেটোর আছে নানা গুণ । টমেটো হচ্ছে একমাত্র সবজি , যাতে চার রকমের ক্যারােটিনয়েড বা ভিটামিন ' এ ' আছে বিপুল পরিমাণে । এই ক্যারােটিনয়েড বা ভিটামিন 'এ ' ত্বক ও চোখের সুস্থতা এবং দেহের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়ায় । এটিকে ফল হিসেবেও বিবেচনা করা যায় । বিশ্বজুড়ে টমেটোর নানা রকম ব্যবহার রয়েছে । এটি ত্বকের যত্নেও ব্যবহার হতে দেখা যায় । সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে এটি মানুষকে রক্ষা করে বলে ধারণা করা হয় । খাবারে স্বাদ আনতেও অনেকে টমেটো ব্যবহার করেন ।

টমেটোর অপকারিতাঃ

কিন্তু জানেন কি , টমেটোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে , যা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয় ।

অম্লের প্রবাহ : টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে , যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে । তাই বেশি টমেটো খেলে বুক জ্বালা করতে পারে । এমনকি পেটে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড বেশি হয়ে হজমে গন্ডগােল হয় । যাঁরা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভােগেন বা যাঁদের গ্যাস্ট্রোওফাজাল রিপ্লেক্স রােগ (জিইআরডি ) আছে , তাঁদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত ।

কিডনিতে পাথর : শুনতে আশ্চর্য লাগলেও অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে । কারণ , টমেটোতে আছে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট । শরীরে এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা শরীর থেকে সহজে দূর হয় না । এ উপাদান শরীরে জমে কিডনির পাথর তৈরি করতে শুরু করে ।

গিঁটে বাত : অতিরিক্ত টমেটো খেলে গিঁটে বাত দেখা দিতে পারে । এমনকি অস্থিসন্ধিগুলাে ফুলে উঠতে পারে । কারণ , এতে সােলানিন নামে বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে । এ যৌগ বিভিন্ন কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী । এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি শুরু করে ।

লাইকোপিনােডার্মিয়া : টমেটোতে লাইকোপেন আছে , এটা সবার জানা । টমেটোর লাইকোপেন প্রােস্টেট ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার রােধে সাহায্য করে । এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ কমাতে পারে । তবে অতিরিক্ত লাইকোপেন থেকে লাইকোপিনােডার্মিয়া নামের একধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে । রক্তে লাইকোপেন বেড়ে গেলে ত্বকের রং বদলাতে শুরু করে । চিকিৎসকেরা বলেন , শরীরের জন্য লাইকোপেন ভালাে হলেও দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রামের বেশি গ্রহণ করা হলে তা লাইকোপিনােডার্মিয়ার দিকে চলে যেতে পারে ।

ডায়রিয়া : টমেটোতে সালমােনেলা নামের একধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে । এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী । তবে যাঁরা টমেটো সহ্য করতে পারেন না,তাঁদের ক্ষেত্রে ছাড়া টমেটো খেলে ডায়রিয়া কম দেখা যায় ।

Post a Comment

Previous Post Next Post